সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার পাত্রীকুল নামক স্থানে অবৈধভাবে উত্তোলনকারী বালুবাহী ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মা ও ছেলে দুজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার ১ জুলাই রাত ৯ ঘটিকায়। নিহতদের পরিচয় এ পর্যন্ত জানা যায়নি। পুলিশ ট্রাকটিকে আটক করেছে। এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাত্রীকুল এলাকায় স্থানীয় জনসাধারণ একত্রে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে প্রশাসনের প্রতি বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, শ্রীমঙ্গলে দীর্ঘদিন থেকে একটি প্রভাবশালী মহল সিন্ডিকেট করে শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাহাড়ি চড়া বা ছোট নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসব নিয়ে অসংখ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার কর্তা ব্যক্তিদের সাথে প্রভাবশালী মহলের দহররম মহরম থাকার কারণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে পত্রপত্রিকার খবর বেরিয়েছে। এমনকি এক ব্যবসায়ী আরেক ব্যবসায়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করে এসবের নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে বলেছেন।
একশ্রেণীর নেতা নামধারী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব ব্যবসা চলে চলছে বলে অনেকের অভিযোগ। ঘটনাটি সবার কাছেই অপেন সিক্রেট হয়ে আছে। কিন্তু প্রাণনাশের আশঙ্কায় অনেকেই ঐ প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলছে না।
শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাসেন্দ্র দত্তের নোয়াগাঁওস্হ গ্রামের বাড়ির পতিত ভূমি থেকে স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আবু বক্কর মিয়া ও তার ছেলে ময়নুল হোসেনসহ এলাকার আরো কয়েকজন মিলে জমি থেকে মাটি উত্তোলন করে গর্ত করে এরা ডুবা বানিয়ে ফেলেছে। উদ্দেশ্য এই যে পানির দামে বিক্রি করে জমির মালিক যাতে অন্যত্র চলে যায়। এসবের পিছনে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র পরোক্ষভাবে মদদ দিয়ে আসছে। ওই চক্রটি বিভিন্ন সময়ে যারা গ্রেপ্তার হওয়ায় তাদের নানা তদবির করে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। তদবিরকারী দালালদের অনেকে বর্তমানে নেতা সেজে স্থানীয় শান্তি প্রিয় লোকদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন বলে জানা গেছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নোয়াগাঁও নামক স্থানে বিস্কুট কোম্পানির সাথের জাগছড়া থেকে মাসুম, শিপুর নেতৃত্বে স্থানীয় একটি চক্র অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে এলাকার বিশিষ্ট শিল্পপতি সিরাজুল ইসলাম হারুন সাহেব ও সাবেক চেয়ারম্যান রাসেন্দ্র দত্তের পতিত জমি উপর ট্রাক দিয়ে বালু বোঝাই করে পাচার করেছে বলে জানা যায়। পরে শিল্পপতি সিরাজুল ইসলাম সাহেব খবর পেয়ে ওই এলাকায় তাঁর জমি উপর দিয়ে বালুর ট্রাক নেয়া বন্ধ করে দেন ।
শুধু বালু উত্তোলন বা পাচারই নয় শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন স্থানে জুয়া ও মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিটিজেন জার্নালিস্টদের অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জনগণকে সচেতন করেছেন। এমনকি আকবর হোসেন শাহিন নামের সরকারি দলের এক নেতা এক কমেন্টে বলেছেন সিন্ডিকেট করেই এসব হচ্ছে।