মোঃ সজিবুর রহমান (নায়েক): বেগমগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা। বেগমগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৮৯২ সালে। বর্তমানে এটি একটি উপজেলা। এ উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম বেগমগঞ্জ থানার আওতাধীন। বেগমগঞ্জ উপজেলার পৌরসভা হচ্ছে : চৌমুহনী ।আর চৌমুহনী পৌরসভার ইউনিয়নসমূহ হচ্ছে : ১নং আমানউল্যাপুর ,২নং গোপালপুর,৩নং জিরতলী ,৪নং আলাইয়ারপুর ,৫নং ছয়ানী ,৬নং রাজগঞ্জ ,৭নং একলাশপুর ,৮নং বেগমগঞ্জ ,৯নং মিরওয়ারিশপুর ,১০নং নরোত্তমপুর ,১১নং দুর্গাপুর ,১২নং কুতুবপুর ,১৩নং রসুলপুর ,১৪নং হাজীপুর ,১৫নং শরীফপুর ,১৬নং কাদিরপুর । আমরা সবাই জানি যে , ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে প্লাবিত হয় দেশের ১১ জেলার ৭৩টি উপজেলা। এই ১১ টি জেলা ও ৭৩টি উপজেলার মধ্য বন্যা প্লাবিত অঞ্চল এর তালিকায় ছিল নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা ও। এই বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ১নং আমানউল্যাপুর ,২নং গোপালপুর,৩নং জিরতলী ,৪নং আলাইয়ারপুর ,৫নং ছয়ানী ,৬নং রাজগঞ্জ ,৭নং একলাশপুর ,৮নং বেগমগঞ্জ ,৯নং মিরওয়ারিশপুর ,১০নং নরোত্তমপুর ,১১নং দুর্গাপুর ,১২নং কুতুবপুর ,১৩নং রসুলপুর ,১৪নং হাজীপুর ,১৫নং শরীফপুর ,১৬নং কাদিরপুর এর মানুষ আশ্রয়হীন ও অসহায় হয়ে পড়ে।সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় হতদরিদ্র সাধারণ মানুষ ডুবে যায় অধিকাংশ ঘরবাড়ি। নারী ও শিশু নিয়ে তারা ওঠে বেগমগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় বন্যা চলাকালীন সময়ে। বন্যার সময় খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসার অভাবে বন্যাদুর্গত মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে অনেক সময় তারা বন্যার পানি খেতে বাধ্য হয়। ফলে পানিবাহিত নানারকম অসুখ-বিসুখ ছড়িয়ে পড়ে তাদের মাঝে । বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ নিয়ে মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন অনেকে।ঠিক তেমন করে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার এক দল তরুণের সংগঠন “বৈষম্যবিরোধী বেগমগঞ্জ ছাত্র সমাজ” যারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুর রহমান এর সর্বাত্মক সহযোগিতায় বন্যা পরিস্থিতির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অদম্য মনোবল, স্বেচ্ছাশ্রম, অক্লান্ত পরিশ্রম নিয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে নির্দ্বিধায় বন্যা প্লাবিত অঞ্চলের দুর্গম এলাকায় বন্যা দুর্গত মানুষদের জন্য আসা সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান , সুংস্থার ত্রাণসামগ্রী গুলো বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ১নং আমানউল্যাপুর ,২নং গোপালপুর,৩নং জিরতলী ,৪নং আলাইয়ারপুর ,৫নং ছয়ানী ,৬নং রাজগঞ্জ ,৭নং একলাশপুর ,৮নং বেগমগঞ্জ ,৯নং মিরওয়ারিশপুর ,১০নং নরোত্তমপুর ,১১নং দুর্গাপুর ,১২নং কুতুবপুর ,১৩নং রসুলপুর ,১৪নং হাজীপুর ,১৫নং শরীফপুর ,১৬নং কাদিরপুর এই এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও হতদরিদ্রদের মাঝে সমান ভাবে বিতরণ এবংবন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করেছে । “বৈষম্যবিরোধী বেগমগঞ্জ ছাত্র সমাজ” যারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃআরিফুর রহমান এর সর্বাত্মক সহযোগিতায় জনস্বার্থে মেডিকেল টিম গঠন করে বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ১নং আমানউল্যাপুর ,২নং গোপালপুর,৩নং জিরতলী ,৪নং আলাইয়ারপুর ,৫নং ছয়ানী ,৬নং রাজগঞ্জ ,৭নং একলাশপুর ,৮নং বেগমগঞ্জ ,৯নং মিরওয়ারিশপুর ,১০নং নরোত্তমপুর ,১১নং দুর্গাপুর ,১২নং কুতুবপুর ,১৩নং রসুলপুর ,১৪নং হাজীপুর ,১৫নং শরীফপুর ,১৬নং কাদিরপুর এই এলাকায় বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্পেইন পরিচালনায় ভূমিকা রাখে।বন্যা চলাকালীন সময় “বৈষম্যবিরোধী বেগমগঞ্জ ছাত্র সমাজ” এর সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুর রহমান মন্তব্য করেছিলেন -: এই টীমের সদস্যরা বিগত ১৪ দিন ধরে উপজেলায় আছে। রাতে ঘুমায় ফ্লোরে, চালের বস্তার উপরে। অধিকাংশই ভালো পরিবারের সন্তান। একজন বললো স্যার ৬ দিন পর বাড়ি গেলাম। বুঝতে পারি নাই ৬ দিন বাড়ি যাই নি । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু মেধাবী তরুন ও এরা একসাথে কাজ করেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। প্রতিদিন রাতে ফিরতে ফিরতে ১ টা বেজে যেত। একদিন তাদের রাত ৪ টায় উদ্ধার করে আনতে হয়। গতকালও আমরা খানপুর থেকে একসাথে রাত ১ টায় ফিরেছি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের EEE ডিপার্টমেন্ট এর সকলে আজ সকালে ঢাকায় ব্যাক করেছে। তাদের পরীক্ষা না থাকলে আরও কিছুদিন থাকতো।আমি এই টীম এর সদস্যদের প্রাণচাঞ্চল্য দেখে উৎসাহ পাই। সকল ক্লান্তি ভুলে যাই।এখানে উপস্থিত ঢাবি এর স্টুডেন্ট ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সহ-সমন্বয়ক জুনায়েদ আবরার ও সজিব সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর EEE ডিপার্টমেন্ট এর অনেকেই। সাথে আছে নোয়াখালী বেগমগঞ্জ এর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর শিক্ষার্থীরা। এই বন্যায় তারা নোয়াখালীর অনেক দুর্গম জায়গায় গিয়ে ত্রান উপহার বিতরণ করে। এই পর্যন্ত নির্দ্বিধায় নিঃস্বার্থে নোয়াখালী ও বেগমগঞ্জের জন্য, বেগমগঞ্জের অসহায় ও দরিদ্র মানুষের জন্য, এবং বেগমগঞ্জের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের এই ভালো কাজে অনেক বাধা-বিপত্তি আসছে। এমনকি অনেকে অনেক ভাবে ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু তারা থেমে নেই তারা এখনো তাদের কাজ চলমান রাখেছে। ভবিষ্যৎ নোয়াখালী, বেগমগঞ্জ এর জন্য আল্লাহর রহমতে তারা অনেক বড় অবদান রাখবে
1,231