মো.শাহিন ইসলাম, রংপুর থেকে: স্বামী হারা সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলো আমার ছেলে। এতদিন তার আয় দিয়েই চলে আসছিল আমাদের সংসার। অসচ্ছলতার কারণে আমার ছেলেকে বেশিদূর লেখাপড়া করাতে পারিনি। অভাবি সংসারের হাল ধরতে চলে যান ঢাকার কোনো এক গার্মেন্টসে।সেই গার্মেন্টসে চাকরি করে যে টাকা পাইতো সেই টাকা দিয়ে কোনো রকমে চলছিলো অভাবি আমাদের সংসার।
কিন্তু পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেললো! এখন আমরা কি খেয়ে বেঁচে থাকবো।
এখন আমাদের দিনের পর দিন না খেয়ে বেঁচে থাকতে হবে। কে করবে মোগো দেখাশোনা? কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব কথা সাংবাদিকদের কে বলেন ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত পোশাক শ্রমিক নাঈম ইসলামের মা হাসনা বেগম। গত বুধবার সকালে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। নিহত নাঈম ইসলাম গত ৪ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। নিহত নাঈম ইসলাম (১৮) নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রনচন্ডী ইউনিয়নের সোনাকুড়ি এলাকার মৃত মোস্তফা আলীর ছেলে। নিহত নাঈম ইসলাম ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,পোশাক কারখানায় কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার সময় রাস্তায় কোটা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন কারীদের মাঝে পুলিশ গুলি ছুড়লে নিহত নাঈম ইসলামের বুকে বেধে যায়।এসময় স্থানীয়রা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করান।প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
রনচন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বিমান পুলিশের গুলিতে নিহত নাঈম ইসলাম এর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন ,ছেলে টা ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করতো। কোটা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন এর সময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে আহত হন নাঈম ইসলাম। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।