মো: আদনান হোসেন ধামরাই ঢাকা : ঢাকার ধামরাই উপজেলার দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড নামক ওষুধ কারখানায় সর্বনিম্ম বেতন ২০ হাজার টাকা, চাকরির বয়স তিন বছর হলে স্থায়ীকরণ, প্রতিবছর বেতন বৃদ্ধিসহ ২২ দফা দাবীতে ধামরাইতে দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড নামের ওষুধ কারখানায় কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড নামের ওই কারখানার শ্রমিকেরা কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়ে কারখানার ভিতরে আন্দোলন শুরু করে। তারা ২২ দফা দাবি নিয়ে এই বিক্ষোভ শুরু করে এবং তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, বেতন বৈষম্য ও নারী শ্রমিকের কর্ম অধিকারের দাবিতে সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে কারখানার ভিতরে আন্দোলন শুরু হয়।খবর পেয়ে ধামরাই থানা পুলিশ ও সেনা বাহিনীর টহল টিমকে কারখানার গেটের বাইরে অবস্থান নিতে দেখা যায়। আন্দোলনটি কারখানার ভিতরে থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাইরেই অবস্থান নেয়। আন্দোলনে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষের একাধিক ব্যক্তি শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে কাজে ফেরার কথা বললেও লিখিতভাবে সমাধান না পেলে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দেন শ্রমিকেরা।
ওষুধ কারখানাটির শ্রমিকেরা জানান, ‘গার্মেন্টসে বেতন বাড়ছে। তাঁরা বেতন পায় ১২ হাজার ৫০০ টাকা। আর আমরা পাই ৭৫০০ টাকা। দ্রব্যমূল্য সবার জন্যই বাড়ছে। তাইলে ওদের বেতন বাড়ছে, আমাদের বাড়াবে না কেন? সবার জন্য সমান হতে হবে।’
কারখানার এক শ্রমিক বলেন, ডেইলি বেসিকে কাজ করি প্রায় দশ বছর ‘পেটের দায়ে কাজ করতে আসছি। হাজিরা দেয় ৩০০ টাকা। কখনও বেতন ৮ হাজার টাকা পাই আবার কোন মাসে এরচেয়েও কম। এই টাকা দিয়ে ঘরভাড়া, খাবার, বাচ্চার লেখাপড়া কোনো কিছুই ঠিকমতো করতে পারি না। কষ্ট কইরা চলতাছি। আমাদের বেতন বাড়াইতে হবে।’
একজন নারী শ্রমিক বলেন, বি সিফটে ডিউটি করলে ছুটি হয় রাত ১০.২০ মিনিটে। ওইসময় বাড়ি ফিরতে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগতে হয়। আগে ১০০ টাকা টিফিন দেয়া হতো সেটাও এখন দেয়া হয় ৫০ টাকা। বারো বছর পর চাকরি স্থায়ী করন হলেও বেতন ধরা হয় ৮০০০ টাকা। স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়াটাও অনেক জটিল।
নয় বছর ধরে কাজ করা এক শ্রমিক জানান, এখনও আমার চাকরি স্থায়ীকরণ হয়নি। ক্যাজুয়াল বা পার্মানেন্ট কোনটাই করা হয়নি। কিন্তু যারা স্যারদের চামচামি করে তাদের অল্প সময়েই পার্মানেন্টও হয় আবার ইনক্রিমেন্টও বেশি হয়। আমার প্রতিমাসে বেতন হয় ৭৫০০ টাকা, কাজ কম থাকলে বাধ্যতা মূলক ছুটি সেক্ষেত্রে বেতন আরোও কম হয়।
এবিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি