জয়পুরহাট জেলায় ক্ষেতলাল থানায় ৭ মামলায় ১০ সাংবাদিকসহ ১২৩৮ জন আসামি

তানজীদ হোসেন জয়পুরহাট প্রতিনিধি: পৃথক পৃথক পৃথক সাতটি মামলায় জয়পুরহাট জেলায় ক্ষেতলালে সাংবাদিকসহ ১ হাজার ২৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের সুযোগ নিয়ে মামলায় বাদির নিজ বাড়িতে সংঘবদ্ধভাবে হাতে লাঠি, ফালা, লোহার রড়, রিভলবার, পেট্রোল ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে দলবদ্ধভাবে লুটতরাজ ও অগ্নি সংযোগ, মারপিট ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে ১০৫ জনের বিরুদ্ধে জয়পুরহাট জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন ক্ষেতলাল পৌর এলাকার মালিপাড়া মহল্লার মৃত নেজাম উদ্দিনের ছেলে নূর আলম।

ওই মামলায় ক্ষেতলাল উপজেলার ৬ জন সাংবাদিককে আসামী করা হয়। আসামীরা হলেন আজিজার রহমান (দৈনিক ভোরের দর্পণ), আনোয়ার হোসেন (দৈনিক নয়াদিগন্ত), শাহিনুর ইসলাম (দৈনিক খোলা কাগজ), আহম্মেদ পান্না (দৈনিক জনবাণী), ওয়াকিল আহম্মেদ (দৈনিক সূর্যোদয়), মুরাদ হোসেন (আজকের দর্পণ)।

এছাড়া গত ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর কেন্দ্রীয় বিএনপির অফিসে হত্যা, জুলুম, আলামত গোপন সহ গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য বিনষ্ট করা এবং মালামাল ছিনতাই এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষেতলাল উপজেলা ধনতলা গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আব্বাস আলী বাদি হয়ে ঢাকা পল্টন থানায় ৭০৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় ক্ষেতলাল উপজেলা দৈনিক সমকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম আকন্দকে আসামি করা হয়।

এ দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট অসহযোগ কর্মসূচি চলাকালে আসামিরা লাঠি, অস্ত্র, ককটেল ও বিস্ফোরক নিয়ে দলবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। এতে গুলিতে শিক্ষার্থী বিশাল মারা যায়।

অন্য মামলার এজাহারে আসামিরা লাঠি, অস্ত্র, ককটেল ও বিস্ফোরক নিয়ে দলবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নিহতের ঘটনায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর গ্রামের শিক্ষার্থী বিশালের বাবা মজিদুল বাদি হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় ১২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই মামলায় দৈনিক কালের কন্ঠ ও নিউজ ২৪ টিভি জেলা প্রতিনিধি আলমগীর হোসেন চৌধুরীকে আসামি করা হয়। একইভাবে গত ১৮ আগস্ট বিশাল হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হলেও অন্য ৩টি মামলায় হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনার অভিযোগ করা হয়।

এছাড়া গত ২৮ আগস্ট জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা করেন নওগাঁর বদলগাছি উপজেলা জগদীশপুর গ্রামের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান। ওই মামলায় ১১৯ জনের মধ্যে আলমগীর হোসেন চৌধুরী, এস এম মিলন (আজকের কাগজ) এবং আব্দুর রাজ্জাক (মুক্ত সকাল) কে আসামী করা হয়। একইভাবে গত ১ সেপ্টেম্বর কালাই উপজেলার তালোড়া বাইগুনি গ্রামের মিয়া নামে এক ব্যক্তি হামলার শিকার এমন অভিযোগ ৯২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে ওই মামলায় সাংবাদিক আলমগীর হোসেন চৌধুরীকে আসামি করা হয়।এসব মামলার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা সরজমিনে পৌর মহল্লার মালিপাড়া গ্রামে বাদির নিজ বাড়িতে গেলে দেখতে পায় তার বাড়িঘর অক্ষুন্ন অবস্থায় রয়েছে। কোথাও কোন আগুনে পোড়ানো কিংবা ভাংচুরের চিহ্ন নেই। সাংবাদিকদের দেখে ওই গ্রামের স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তাদের কাছে গ্রামে ককটেল নিক্ষেপ ও মারামারি, অগ্নি সংযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান এই গ্রামে কখনই এই ধরণের ঘটনা ঘটেনি

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button