বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ

সংগ্রাম দত্ত: বাংলাদেশে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা।

সম্প্রতি হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে শনিবার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রামের চেরাগি পাহাড় মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

শত শত মানুষের অংশগ্রহণে এই বিক্ষোভে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সংখ্যালঘুদের চিকিৎসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সেইসাথে দাবি অনুযায়ী দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ৫২টি জেলায় ২০৫টি সহিংস ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) চিঠিটি উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সভাপতি নির্মল রোজারিও। রোজারিও বলেন, “আমাদের কাছে প্রাথমিক তথ্য রয়েছে, এ পর্যন্ত ৫২টি জেলায় অন্তত ২০৫টি সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে।”

“আমরা সারা রাত জেগে বাড়ি ও মন্দির পাহারা দিই। আমি আমার জীবনে এমন ঘটনা দেখিনি। আমরা প্রশাসনের কাছে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।”

চিঠিতে দাবী করা হয়েছে, দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে শঙ্কা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে শনিবার দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা প্রসঙ্গে বলেছেন, “বাংলাদেশে, দুর্ভাগ্যবশত, প্রতিটি বিপ্লবের সাথে, পট পরিবর্তনের সাথে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা হামলার শিকার হন, তা সে মুসলিম হোক বা হিন্দু। কিছু বিচ্ছিন্ন আক্রমণ (সংখ্যালঘুদের উপর) হতে পারে তবে এটি মোটেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। কখনোই নয়।” তিনি বাংলাদেশে “অসাধারণ” সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে বলে দাবী করেন।

এর আগে শনিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি স্বার্থান্বেষী মহল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১০ আগস্ট) ড. ইউনূস পুলিশের গুলিতে নিহত রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবু সাঈদের বাড়িতে যান এবং পরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়কালে এ আহ্বান জানান।

তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “সংবাদপত্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবেদন আসছে। তারা কেন হামলার শিকার হবে? তারা কি দেশের নাগরিক নন? তোমরা (শিক্ষার্থীরা) দেশকে বাঁচাতে পেরেছ, সংখ্যালঘু পরিবারগুলোকে কি বাঁচাতে পারবে না?

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button