পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুজনের নামে দুদকের মামলা

মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরে পদ্মা সেতু প্রকল্পের  জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের সাড়ে ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সাবেক সার্ভেয়ারসহ দুজনের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত কার্যালয়ে  দুর্নীতি দমন কমিশনের (দূদক) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে  মামলাটি করেন। পরে মামলার কাগজপত্র মাদারীপুরের আদালতে পাঠানো হয়।

দুদকের মামলায় আসামিরা হলেন, মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সাবেক সার্ভেয়ার মোস্তাফিজুর রহমান (৪৪) ও তার স্থানীয় সহযোগী রুবেল হাওলাদার (৩৮)। মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমণি (নুরাইনপুর) গ্রামে। আর রুবেল হাওলাদারের বাড়ি মাদারীপুর শহরের কুকরাইল-গোলাবাড়ি এলাকায়।

মামলার সুত্র থেকে জানা যায়, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে জমি অধিগ্রহণের ৪ কোটি ৫৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা নিজেদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নেন মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হাওলাদার। ২০১৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১৮টি চেকে এই অর্থ তারা আত্মসাৎ করেন। এমন অভিযোগ ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্তে নামে দুদকের মাদারীপুরের সমন্বিত কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান  বলেন, ‘অভিযুক্ত দুজনই সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। সরকারি কর্মচারী সার্ভেয়ার মোস্তাফিজুর রহমানের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন রুবেল হাওলাদার। রুবেলের মাধ্যমেই তিনি টাকা লেনদেন করেছেন বলে তথ্য–প্রমাণ রয়েছে। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সরকারি টাকা আত্মসাৎ চক্রের সঙ্গে আরও যেসব সরকারি-বেসরকারি লোকজন জড়িত, তাদের ধরতেও আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। আমরা আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রের সঙ্গে এসব বিষয়ও উল্লেখ করেছি।

অভিযোগের বিষয়ে সার্ভেয়ার মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ‘আমার এখানে কোনো ভুল নেই। সরকারি কোনো টাকা আমি আত্মসাৎ করিনি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। সিনিয়র অফিসাররা অনিয়ম করে আমাদের দিকে দায় চাপিয়ে এখন মামলা করে আমাদের সর্বস্বান্ত করার চেষ্টা করছে। বিষয়টি অধিকতর তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

এই বিষয়ে মাদারীপুর দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিক রহমান বলেন, ‘মামলার আসামি দুজনকে আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে ইতোমধ্যে তাদের সম্পদ বিবরণীর নোটিস জারি করা হয়েছে। আগামী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের পক্ষে অর্জিত সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আরও ২টি মামলা দায়ের করা হবে।

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button