সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের নেই কোন চিকিৎসক- বাড়ছে গরুর রোগ 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে দুই বছর ধরে নেই চিকিৎসক। রয়েছে বিভিন্ন পদ খালি। গবাদিপশুর জরুরি ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসক ও ওষুধ না থাকায় ভেটেরিনারি চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারে বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে জানান তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এফএআই ওরাফেল আহাম্মেদ।
এদিকে তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ দপ্তরে ভেটেরিনারি সার্জন, ইউএলএ, ভিএফএ, এফ.এ.(এ.আই), অফিস সহকারী, পিয়ন, ড্রেসার ও অফিস সহায়কের পদের আরও নয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারির পদ শূন্য রয়ে গেছে।
তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এফএআই ওরাফেল আহাম্মেদ বলেন, ডাক্তার বিবেচনা করলে এখন একজনও নেই। এমন পরিস্থিতিতে রায়গঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলামকে তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। তিনিও ওইখানে অফিস কম করেন। করোনার পর থেকে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধির চিকিৎসায় অত্যাবশ্যকীয় বেশ কয়েক ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না হাসপাতালে। ভুক্তভোগী খামারিদের শান্তনা দেওয়ার মতো সামান্য কৃমিনাশক ওষুধ রয়েছে। কিন্তু গবাদিপশুর আঠালী পোকা মারা ওষুধ, এ ছাড়া বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের সিরাপসহ অন্য কোনো ওষুধ নেই। চলতি অর্থ বছরে খুবই অল্প ওষুধ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালে। এত কম ওষুধে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব না।
চিকিৎসার অভাবে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক গরু মারা গেছে
করোনার পর গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধির অত্যাবশ্যকীয় ওষুধগুলো ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না
এদিকে রায়গঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলাম বলেন, সপ্তাহে একদিন অল্প সময়ের জন্য হলেও তিনি তাড়াশে অফিস করেন।
তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের চিকিৎসা সহকারী মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, এবারের শীতেও চিকিৎসার অভাবে বেশ কিছু গরু-ছাগল মারা গেছে। গত বছরেও ভাইরাসজনিত গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়ে উপজেলায়। চিকিৎসার অভাবে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক গরু মারা গেছে।
তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ী গ্রামের গরুর খামারি আমজাদ আলী বলেন, শীতে গবাদিপশু রোগবালাই বেড়েছে। জ্বর ও শর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু কোনো চিকিৎসা পাচ্ছি না হাসপাতালে। তালম গ্রামের হানিফ নামের একজন বলেন, শীতে ব্যাধি হয়ে আমার একটি বাছুর গরু ও দুইটি ছাগলের বাচ্চা মারা গেছে চিকিৎসার অভাবে।
সিরাজগঞ্জ প্রাণিসম্পাদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওমর ফারুক বলেন, উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এসেছিলেন সিরাজগঞ্জে। আমি ওনান কাছে এখানকার প্রাণিসম্পদ দপ্তরের নানা সমস্যার কথা বলেছি। তিনি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে গেছেন।
সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ, রায়গঞ্জ, সলঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে একজন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে তাড়াশে ডাক্তার হিসাবে আনার চেষ্টা করা হবে।

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button