টি এম এ হাসান, সিরাজগঞ্জ : প্রসূতি নারীকে সিজার করতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বাঁচানো যায়নি বৃষ্টি অধিকারী নামের ওই প্রসূতি নারীকে।
শহরের বেসরকারি সেবা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমনি অভিযোগ তোলেন ওই নারীর পরিবার।
এরইমধ্যে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মৃত ওই হিন্দু নারীকে দ্রুত সৎকার করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহতর অভিভাবকের কাছে ত্রিশ হাজার টাকা দেন।
ইতিমধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কর্তব্যরত চিকিৎসক গা ডাকা দিয়েছে। তাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, নিহত বৃষ্টি অধিকারী পৌর এলাকার রায়পুর ১নং মিলগেটের পাশে গনেশ কুমারের মেয়ে। নিহতের স্বামী
গৌতম দাস নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার মাতনগর গ্রামে। ডেলেভারীর জন্য তার স্বামী মায়ের বাড়ীতে রেখে যান।
হাসপাতালে আসা অন্য রোগীর স্বজন মুরাদ জানান, কিছুক্ষণ আগে জানতে পারলাম বিষয়টি ধামাচাপা ও দ্রুত সৎকার করতে নিহতের পরিবারকে ৩০হাজার টাকা দিয়েছে সেই সাথে চুক্তি করা ১০হাজার টাকাও ফেরত দিয়েছে।
নিহতের ভাই প্রান্ত বাগচী বলেন, সিজার করার জন্য গতকাল (২৫ মার্চ) সোমবার আনুমানিক ১১টার দিকে সেবা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আলী দশ হাজার টাকা চুক্তিতে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। অপারেশন শেষে এক ছেলে বাচ্চার জন্ম হয়। মধ্যে রাতে বোনের পেট ফুলে যাওয়া ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের বিষয়টি মোহাম্মদ আলীকে অবগত করলে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান । পরে সকাল হলে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আমাদের দশ হাজার টাকা ফেরত দেন ও দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করতে বলে। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের নানা প্রশ্ন করা হলে স্থানীয় ও থানা পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে এ্যাম্বুলেন্স যোগে বগুড়ায় নিয়ে যেতে বাধ্য হই। এসময় বোনের শ্বাসনালীর দিকে খেয়াল করলে দেখি অনেক আগেই মারা গেছেন।
এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন কি না জানতে চাইলে প্রান্ত বলেন, “আমরা গরীব মানুষ। ঝামেলায় যেতে চাই না। তবে হাসপাতালে ভালো মানুষকে নিয়ে এসে আর কারো যেন মৃত লাশ নিয়ে বাড়ী ফিরে যেতে না হয়। তবে পরিবারের সাথে আলোচনা করে পরে বলবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনসহ থানা পুলিশ ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জোর সুপারিশ করেন মারা যাওয়া নারীর স্বজনরা।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি (অফিসার ইনচার্জ) সিরাজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি এই মাত্র জানতে পারলাম, বিষয়টি দেখছি।