সংগ্রাম দত্ত:মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা প্রতিরোধে শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা রাত জেগে পাহারা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।
গত ৫ আগস্ট রাত থেকে শনিবার (১০ আগস্ট) পর্যন্ত শহর এবং উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ও গির্জায় রাত জেগে পাহারা দিতে কওমি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে ।
এ কারণে উপজেলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো মন্দির বা উপাসনালয় এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এমন কর্মকাণ্ডে উপজেলার বিভিন্ন মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন কওমি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, শহরের জগন্নাথ দেবের আখড়া, ভৈরব মন্দির, সার্বজনীন দুর্গাবাড়ী, ক্যাথলিক মিশন, শ্রী শ্রী শ্রীমঙ্গলেশ্বরী কালীবাড়ী, বারোয়াড়ী কালীবাড়ী, রামকৃষ্ণ মিশন, জগদ্বন্ধু আশ্রম ও মিশন, ইসকন মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দিরের সামনে পাহারা নিয়েছেন বসেছেন শ্রীমঙ্গলের বরুণা, শেখবাড়ি, মাদ্রাসাতুল কুরআনিল কারিমসহ উপজেলার কয়েকটি কওমি মাদ্রার ছাত্র-শিক্ষক। কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে গত ৫ আগস্ট রাত থেকে উপজেলার মন্দির ও বিভিন্ন উপসনালয়ে রাতভর পাহারা কার্যক্রম শুরু হয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলমান রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শনিবার (১০ আগস্ট) রাতে শ্রীমঙ্গল কলেজ রোডের শ্রী শ্রী শ্রীমঙ্গলেশ্বরী কালীবাড়ী মন্দিরে জনপ্রিয় উর্দু নাশিদ শিল্পী শেখ এনাম, তরুণ আলেম নুহ বিন হোসাইন, শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী বরুণা মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন ও আহমদ জুবায়ের জুয়েলসহ অন্যরা পাহারারত ছিলেন।
মন্দিরের প্রধান ফটকের সামনে তারা অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন।
পাহারারত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বলেন, আমরা অসাম্প্রদায়িক একটি দেশের স্বপ্ন দেখি। সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকব এটাই আমাদের চাওয়া। এ ছাড়া বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের উদ্যোগেও পাহারা চলমান রয়েছে। এদিকে রাতের বেলা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর টহল টিমও কাজ করছে। রাতে সেনাবাহিনীর গাড়ি শহরের বিভিন্ন সড়কে টহল দিতে দেখা যায়। সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তিকে পেলেই তারা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
বরুণা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায় ও মন্দিরের ওপর হামলার খবরে বরুণা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা বদরুল আলম হামিদী ও নায়েবে সদরে মুহতামিম মাওলানা শেখ নূরে আলম হামিদীর নির্দেশে বরুণার মাদ্রাসার ছাত্রদের কয়েকটি টিম নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ও উপাসনালয়ে রাত জেগে পাহারার দেওয়ার ব্যবস্থা করেন