সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় অবৈধভাবে বিভিন্ন ছড়া (ছোট নদী) থেকে উত্তোলন করে পাচারকারী সঙ্ঘবদ্ধ বালু সিন্ডিকেট, লাউয়াছড়া বনাঞ্চলের শত শত একর ভূমি দখল করে চা বাগান, রিসোর্ট, লেবু ও আনারস বাগান তৈরিকারী ধনাঢ্য প্রভাবশালী চক্র, কৌশলে প্রতারণা করে গরিব ও শান্তি প্রিয় মানুষের জমিজমা লুণ্ঠনকারী ভূমিদস্যু, ধনাঢ্য প্রভাবশালী মহল কর্তৃক জমির দালাল সৃষ্টি করে মানুষের জমিজমা লুণ্ঠনকারী চক্রসহ সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধী ও গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।
স্থানীয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিরা বাগান করার নামে দখল করছেন সংরক্ষিত এই বনের জমি। সব জেনেও চুপ থাকতে বাধ্য হচ্ছে বন বিভাগ। এতে বন হারাচ্ছে বৈচিত্র্য। হুমকির মুখে পড়েছে বন্যপ্রাণি ও স্থানীয় বনজীবীরা।
গুঞ্জন শোনা যায় যে, রাতারাতি বনে যাওয়া ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অনেকে বড় বড় দলগুলোতে অবৈধ ও কালো টাকার প্রভাবে নেতা সেজে বসে আছে। অনেকে পানির মত কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভোট কিনে জনপ্রতিনিধি সেজেছেন। শক্তিশালী ও সঙ্ঘবদ্ধ চক্রটি বিভিন্ন দলে থাকলেও লুণ্ঠনে তারা সবাই এক বলে জানা গেছে। একদল চলে গেলে অপর দলকে সেল্টার দিয়ে থাকে। তাদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য মাসুয়ারা টাকা দিয়ে কিছু ইলেকট্রনিক , প্রিন্ট মিডিয়া ও সিটিজেন জার্নালিস্টদের নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে দিয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য পোষে রেখেছেন ও তাদের আঙ্গুলি হেলেনে তাদেরে ব্যবহার করে থাকেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
সঙ্গবদ্ধ এই অপরাধী চক্রটি বালু সিন্ডিকেট, ভূমি দস্যু সিন্ডিকেট করে দালালদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জায়গা জমি কৌশলে প্রতারণা করে সর্বস্বান্ত করে থাকেন বলে জানা গেছে।
বছর কয়েক পূর্বে ব্যারিস্টার সুমন শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক এলাকায় ভিডিও করে তাঁর ফেসবুক লাইভে শেয়ার করে বলেছেন যে লাউয়াছড়া বনাঞ্চলের বিস্তীর্ণ একর ভূমি স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা দখল করে চা বাগান তৈরি করেছেন। এছাড়াও কিছু ডাকসাইটে নেতা নামধারী লোকজন বনের জায়গা জমি দখল করে কিছু রিসোর্ট ও বিভিন্ন ধরনের বাগান তৈরি করেছেন বলেও খবরে জানা যায়। এ নিয়ে সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলার পাত্রীকুল নামক স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ট্রাক দিয়ে পাচারকালে যাবার সময় এক বৃদ্ধ ও এক শিশুকে ধাক্কা দিলে বৃদ্ধা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। শিশুটি অসহ্য যন্ত্রনা পেয়ে মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। এছাড়াও কয়েক বছর পূর্বে সিন্দুর খানের হুগলি নামক স্থানে বালুর গাড়ির নিচে চাপা পড়ে এক ছাত্র নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি যারা টাকার জোরে বিভিন্ন এলাকায় জমির দালাল সৃষ্টি করে রেখে সাধারণ শান্তিপ্রিয় ও নিরীহ মানুষের জমি কেনার নাম করে বিভিন্নভাবে তাদের সর্বশান্ত করে থাকেন বলে জানা গেছে। চক্রটি কতিপয় নেতার নেতৃত্বে পরিচালিত। প্রভাবশালী গডফাদার দালালদের পিছনে থাকায় সাধারণ মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। অনেকে ভয়ে মামলাও করতে চায় না।
কিছুদিন পূর্বে শ্রীমঙ্গল থানার নোয়াগাঁও নামক স্থানে সাবেক চেয়ারম্যান রাসেন্দ্র দত্তের পতিত ভূমি হতে জোরপূর্বক ভাবে শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য মালেকা বেগমের স্বামী লোকজন লাগিয়ে জোরপূর্বক ভাবে কেটে নিয়ে যায়। উদ্দেশ্য এই যে যন্ত্রনা পেয়ে জমির মালিক অপযতা বা পানির ধরে বিক্রি করে বা ফেলে রেখে যাতে চলে যায়। ইতিপূর্বে এই ধরনের ঘটনাও ঘটেছে, ঘটছে। বিষয়টি সকলের কাছে ওপেন সিক্রেট হয়ে আছে। কিন্তু নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার ভয়ে কেউ প্রকাশ করে না।
অতীতে হারুন ও জয়নাল গং সাবেক চেয়ারম্যান রাসেন্দ্র দত্তের একমাত্র বোন ও ভাইদের জিম্মি করে ষ্টাম্পের উপর দস্তগত নিয়ে বিশাল সম্পত্তি দখল করার প্রয়াস নিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ও তৎকালীন স্থানীয় পৌর মেয়র আহাদ মিয়ার হস্তক্ষেপে কারণে তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি বলে জানা গেছে