শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের বিশেষ অভিযানে আন্তজেলা ছিনতাই চক্রের ৪ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ সকাল (২৭ফেব্রুয়ারি ) মঙ্গলবার মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানানো হয়,আসামীদের মৌলভীবাজার জেলা কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সারোআর আলমের নেতৃত্বে, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায়ের দিক নির্দেশনায় থানা পুলিশের একটি চৌকস দল গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সিলেট শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে একাধিক ছিনতাই ও ডাকাতি মামলার আসামি ১। বেলাল আহমেদ ওরুফে জাকির ওরফে জাকারিয়া মোল্লা, পিতা-মৃত আব্দুল জলিল, গ্রাম- চন্দন ভাগ, থানা- গোলাপগঞ্জ; ২।কামাল মিয়া,পিতা-লাল মিয়া, গ্রাম- মুক্তিরচক, থানা- শাহপরান; ৩। হোসেন @ তৌফিক, পিতা- মৃত নিজাম উদ্দিন, গ্রাম-নাগেরকোনা, থানা- উসমানীনগর এবং ৪। বাবুল আহমেদ (৩৪), পিতা -আব্দুল মতলিব, সাং- হেতিমগঞ্জ, থানা -গোলাপগঞ্জ, সর্বজেলা- সিলেট তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এবং ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল, নগদ টাকা এবং বিভিন্ন লুন্ঠিত সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ০৬ ডিসেম্বর/২০২৩ দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানা এলাকায় ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বের হবার পর এক নারী ছিনতাইয়ের শিকার হন, এরপর গত ১৮ জানুয়ারি/ ২০২৪ মৌলভীবাজার সদর থানা এলাকায় একটি এবং পুনরায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি/২৪ দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানা এলাকায় একটি ছিনতাই ঘটনায় দুজন চা শ্রমিকের পেনশনের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়। এসব ঘটনায় থানায় পৃথক মামলা রুজু করা হয়।
প্রেস ব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ, জানান, প্রতিটি ঘটনায় ছিনতাইয়ের স্টাইল ছিল একই রকম। মোটরসাইকেল দিয়ে সিএনজি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা ও মূল্যবান জিনিস লুট করত তারা। এই ছিনতাই চক্রকে গ্রেফতারের জন্য মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান পিপিএম (বার) এর দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সারোআর আলমের নেতৃত্বে একটি বিশেষ অভিযানিক টিম গঠন করা হয়। এই বিশেষ টিম গত কয়েকদিন ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো সম্পর্কে তথ্য উপাত্ত (সিসি টিভি ফুটেজ/ছবি) সংগ্রহ করে, সেগুলো বিশ্লেষণ করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের সনাক্ত ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
তদন্তকালে ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে সংগৃহীত ব্যক্তিদের ছবির সাথে আসামিদের চেহারার হুবহু মিল পাওয়ায় যায়, এবং পুলিশের নিকট ছিনতায়ের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসামিদের’ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণের জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে । এক্ষেত্রে তারা মূলত ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী নারী ও বয়স্কদের টার্গেট করতো এবং উপযুক্ত স্থানে মোটরসাইকেল দিয়ে সিএনজি আটকে অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে এবং অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যেত।
থানা রেকর্ড পর্যালোচনায় আসামি ১। বেলাল আহমেদ ওরফে জাকির ওরফে জাকারিয়া মোল্লার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ও ডাকাতির অভিযোগে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় ০৭ টি মামলা, ২। কামাল মিয়ার বিরুদ্ধে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির অভিযোগে ৪ টি মামলা; আসামি ৩। হোসেন ওরফে তৌফিক এর বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানায় ২টি ডাকাতি মামলা এবং আসামি ৪। মোঃ বাবুল আহমেদ এর বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোর মোগলাবাজার থানায় ডাকাতি ও দস্যুতার ২টি মামলা আছে বলে জানা যায়।
মৌলভীবাজার জেলায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ অপরাধ দমনে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান পিপিএম (বার)এর দিকনির্দেশনায় সারা জেলার পুলিশের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।