শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা পাহাড় আন্দোলন: অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এক উজ্জ্বল পথরেখা

 

সংগ্রাম দত্ত: শহীদ দিবস। বায়ান্ন এর নয় তেষট্টির। ভাষা আন্দোলনের নয় বালিশিরার কৃষক বিদ্রোহের বা কৃষক আন্দোলনের। বরকত- সালাম- রফিক- জব্বারের নয়, ৮০ বছরের বৃদ্ধ কৃষক গণু মিয়া ও মেট্রিক পরীক্ষার্থী ১৯ বছরের তরুণ সালিক মিয়া রক্তে রাঙ্গা ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, বালিশিরার শহীদ দিবস।
এ বছর তার ৬২তম বার্ষিকী অতিবাহিত হচ্ছে। কারো হয়তো মনে আছে, কারো বা নেই। যারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। অংশ নিয়েছিলেন ।তাদের অনেকেই নেই। আবার কেহ আজো জীবিত। দিবসটি আজও স্মৃতির মনিকোঠায় দুঃস্বপ্ন হয়ে আছে হয়তো, হয়তোবা কৃষকদের কাছে এ দিবস টি গৌরবোজ্জ্বল হয়ে জ্বলজ্বল করে চোখে চোখে ভাসছে।

পাকিস্তান আমলের ধনিক শ্রেণী তৎকালীন সিলেট জেলার মৌলভীবাজার মহাকুমার ( বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা) শ্রীমঙ্গল থানাধীন বালিশিরা পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার ১৬ হাজার ৬০ একর জমির ১২ হাজার একর ভূমি লিজ নিয়ে নতুন করে চা বাগান করতে চেয়েছিল। উচ্ছেদ করতে চাচ্ছিল এলাকায় বসবাসকারী টিপরা, চা শ্রমিক বংশোদ্ভূত লোকজন, মহালদার, জোরদার, পাট্টাধারী একসনা বন্দোবস্ত, পাহাড় কামলা, দিনমজুর, বেকার, কর্মজীবী, কৃষক ও শ্রমিককে।

শ্রমজীবী, দিনমজুর, পাহাড় কামলা ও বেকাররা পাহাড়ের খাস জমি হতে বাঁশ , বেত,শন, ও কাঠ এনে এলাকার হাটবাজারে বিক্রি করে পরিবার পরিজনকে ভরনপোষণ করত, জীবিকা নির্বাহ করত, জীবন বাঁচাতো। বংশ ও পরম্পরায় তারা এ অধিকার সংরক্ষণ করে আসছিল। ধনীদের শৈন্য দৃষ্টিতে এ জমিগুলো পোড়ায় তা সরকার হতে চা বাগান করার জন্য বন্দোবস্ত নিয়ে কাজ জমি পাট্টা দাড়ি এক সোনা ইত্যাদি জমি ও গায়ের জুড়ে দখল করছিল। এমতাবস্থায় ১৯৬৩ সনের ১৯ ফেব্রুয়ারি মহালদার, জোতদার, পাট্টাদার, একশনা বন্দোবস্তকারী পাহাড় কামলা, দিনমজুর সহ এলাকার শ্রমিক কৃষকদের নিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে অধিকার সংরক্ষণের জন্য হাজার হাজার লোক ঝাঁপিয়ে পড়ল। তার সংখ্যা হবে দুহাজারেরও উপরে। এলাকার তৎকালীন প্রভাব প্রতিপত্তিশালী এমএনএ মরহুম কেরামত আলী, হামিদুর রহমান, মাহমুনুর রশিদ, এম এম ইস্পানি সহ ধনী চা বাগানের বন্দোবস্তকারীরা দলবদ্ধ হলেন। কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট পাঠালেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হলো। শুরু হলো প্রতিরোধ।

কৃষক বিদ্রোহে আন্দোলন জনগণ জুলেখা নগর চা বাগানের দখলকৃত এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে বাগান পুড়িয়ে দিল।। বাড়িফেরা পথে কালীঘাট চা বাগানের পিচ ঢালা রাস্তায় পুলিশ ব্যারিকেড করল ট্রাক দিয়ে ও সশস্ত্র আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে। আন্দোলন মুখি সংগ্রামী জনতা পুলিশ প্রতিরোধ ব্যাংকে সামনে এগিয়ে চলল, পুলিশের হাতের ৭টি রাইফেল ছিনিয়ে নিল। ম্যাজিস্ট্রেট সংঘর্ষে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পুলিশকে গুলি করা নির্দেশ দিলেন। গাড়ির নিচে পজিশন নিয়ে পুলিশ মিছিলের উপর বেপরোয়া গুলি ছুঁড়লো। ফলে ঘটনাস্থলে পুলিশের গুলিতে মারা পরল বৃদ্ধ কৃষক নেতা গণু মিয়া , মারাত্মকভাবে গুলিবদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ল মেট্রিক পরীক্ষার্থী ছাত্র সালিক মিয়া, আরও অনেকে গুলিতে ও সংঘর্ষে আহত হয়ে পালালো। আহত সালিককে ৮ জনে ধরাধরি করে বহন করে কালীঘাট হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল। সশস্ত্র পুলিশ এসে জোর করে তাকে আগ্নেয়াস্ত্রের শক্তি বলে বলিয়ান হয়ে কেরে ও ছিনিয়ে নিয়ে নিল। শ্রীমঙ্গল থানায় ট্রাকে করে বৃদ্ধ কৃষক গণু মিয়ার লাশ ও ছাত্র সালিক মিয়াকে আহতবস্থায় নিয়ে এল। সালিক পানি দেও, পানি দেও, বলে আত্মচিৎকার করতে লাগলো। কিন্তু পুলিশ তাকে এক ফোঁটা পানিও দিল না। সালিক ও পড়ে মারা গেল। ছিনতাইকৃত বন্দুক চেয়ারম্যান আসিদুল্লাহর কাছে জমা দিলে তিনি তা পুলিশকে সাজিয়ে দিতে বলেন। অস্ত্র জমা দিতে যারা গেল তারা ধরা পড়লো। শতশত লোককে এ ঘটনায় জড়িত করে মামলা শুরু হল। অসংখ্য লোককে জেলে পাঠানো হলো। নির্বিচারে ধরপাকড় ও পুলিশি নির্যাতন চলল। নির্যাতনের ভয়ে বালিশিরা দক্ষিণাঞ্চলের সকল পুরুষ লোক বাড়ি ছেড়ে পালালো। এমনকি মহিলারাও পুলিশি জুলুমের শিকার হতে লাগলো।
এমতাবস্থায় ২৩ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৩ সিলেট জেলা ন্যাপের সভাপতি প্রখ্যাত ন্যাপ নেতা নবাব আলী সফদর খান রাজা সাহেব, পীর হাবিবুর রহমান, তারা মিয়া, সৈয়দ আকমাল হোসেন, সিলেট জেলার সম্পাদক উকিল মনির উদ্দিন, পূর্ব পাকিস্তান চা শ্রমিক সংঘ এর সাধারণ সম্পাদক মফিজ আলী, সৈয়দ মতিউর রহমান, রাসেন্দ্র দত্ত, কৃষক নেতা আব্দুল মালেক শ্রীমঙ্গলে এসে শহীদ সালিকের ফুফাতো ভাই প্রখ্যাত ন্যাপ নেতা মোঃ শাহজাহানের নেতৃত্বে শহীদ সাদিকের ভাই এলাইছ মিয়া, আব্দুল খালেক (বুরাক মুন্সি গায়ক), আব্দুস সুবহান চৌধুরী, হাজী মনু মিয়া, আফসার উদ্দিন, মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ, মোহাম্মদ তামশাই, মোঃ ফয়জুর রহমান, মোঃ জাফর আলী, মোঃ কুটি মিয়া, মোহাম্মদ আরজু মিয়া, মোঃ সোনাহর মিয়া, মোহাম্মদ হারিছ মিয়া, আব্দুল খালেক, মোঃ মরহুম মিয়া, মোঃ ইসমাইল , আব্দুল হক ও ন্যাপ নেতা এম এ রহিমসহ বালিশিরা এলাকার মানুষকে সমবেত ও সংগঠিত করতে লাগলেন। পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হল। এ সময় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ( ১) একটি সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হলো (২) শ্রীমঙ্গল শহরে বিরাট জনসভার কর্মসূচি নেওয়া হল (৩) উপদ্রুত এলাকার অধিবাসীদের সন্ধ্যার পর হতে রাত ১২টা পর্যন্ত জঙ্গি স্লোগান দিয়ে চলতে হবে। কর্মসূচি অনুযায়ী শ্রমিকদের স্লোগান ছিল- ১) বালিশীরা পাহাড়ের নতুন চা বাগান করা চলবে না। ২) কৃষকদের জমির অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। ৩) কৃষকদের উপর পুলিশি নির্যাতন বন্ধ কর।
সরকারের অত্যাচারের স্ট্রিম রুলার চূর্ণ-বিচূর্ণ করে সিলেটের কৃষক সমিতি ও ন্যাপের জঙ্গি কর্মীরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেন। এ আন্দোলনের পরিধি গোটা পূর্ব পাকিস্তানের ছড়িয়ে পড়ল এবং এর প্রতিবাদে সারা প্রদেশের কৃষক শ্রমিক ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠলো। ঘটনার ১৬ দিন পর ৭ মার্চ ১৯৬৩ শ্রীমঙ্গল শহরের নতুন বাজারে এর প্রতিবাদে ন্যাপের সভাপতি মৌলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে প্রধান অতিথি করে এক বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

১০ মার্চ ১৯৬৩ শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান হতে ২২ মাইল পায়ে হেঁটে ২৫ হাজার লোক মৌলভীবাজার শহরের এসডিওর কার্যালয়ে তাদের দাবিদাওয়া পূরণের মানসে ঘেরাও করে। ওই মিছিলে এনডিএফ নেতা সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নুরুর রহমান চৌধুরী ও ফুলচরা চা বাগানের হেত ক্লার্ক মোহাম্মদ আলতাফুর রহমান চৌধুরী যোগ দেন। এবং মৌলভীবাজারের কাশিনাথ হাই স্কুল মাঠে এক প্রতিবাদ সভায় সকলে মিলিত হন। সিলেট জেলার কৃষক আন্দোলনের ইতি ইতিহাসে এত বড় মিছিল আর কখনো সংঘটিত হয়নি।

বিক্ষুব্ধ ও উত্তেজনা মুখর কৃষক আন্দোলনের মুখে সরকার নতি স্বীকার করে গুরি বর্ষনের তিন মাস পরে তৎকালীন প্রাদেশিক গভর্নর জেনারেল আজম খান ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় শ্রীমঙ্গল পৌরসভা মাঠে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে এবং পাহাড়ে উৎপাদিত জুমের বাগানের ফসল তরিতরকারি, লেবু ,আনারস, তেজপাতা, কাঁঠাল ইত্যাদি গভর্নর কে প্রদর্শন করা হয়। গভর্নর ঘেরাও থাকাবস্থায় আশ্বাস প্রদান করেন যে, এক ঘটনা তদন্ত করার জন্য অবিলম্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং ঘোষণা অনুযায়ী: ১) রেভিনিউ বোর্ডের চেয়ারম্যান ২) কৃষি বিভাগের ডিরেক্টর ৩) চা বোর্ডের চেয়ারম্যান ৪) প্রাদেশিক ফরেস্ট কনজারবেটার৫) জেলা ফরেস্টার সিলেট ৬)জেলা প্রশাসক সিলেট ৭) মহকুমা প্রশাসক মৌলভীবাজার ও স্থানীয় চারজন চেয়ারম্যান তদন্ত কমিটির অন্তর্ভুক্ত হন। এমতাবস্থায় স্থানীয় কৃষকদের পাহাড়ে জমি বন্দোবস্তের ব্যাপারে আংশিক সুরাহা হয়। অধিকাংশ জমিই চা বাগানের মালিকরা দখল করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার পর হতে প্রতিবছর শ্রীমঙ্গল ন্যাপের উদ্যোগে মোঃ শাহজাহান মিয়া, রাসেন্দ্র দত্ত ও স্থানীয় জনসাধারণের প্রচেষ্টায় বালিশিরা ১৯ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস পালিত হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় মুক্তি পেলে ১৯৬৯ সালে শ্রীমঙ্গলে আলতাফুর রহমান চৌধুরী এনডিএফ ছেড়ে আওয়ামী লীগে, প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়নের ফাউন্ডার জিএস মোঃ ইলিয়াস কমিউনিস্ট পার্টি ছেড়ে ও ডাক্তার আব্দুল আলীকে নিয়ে আওয়ামী লীগ গঠন করলে বালিশিরা আন্দোলনের কিছু নেতাকর্মী এতে যোগদান করেন। তখন থেকে ন্যাপ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্যোগে পৃথক পৃথকভাবে বালিশিরা শহীদ দিবস পালন করা হয়। ঐ সময় দীর্ঘ ছয় বছর পর ‘৭০ এর নির্বাচনের পূর্বে মরহুম কেরামত আলী সাহেবের ছেলে মোঃ মহিবুর রহমান চেরাগ মিয়া এলাকায় নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার মানসে বালিশেরার কৃষকদের সাথে আপোষ করেন ও তদ্বীয় পিতার দেয়া মামলা প্রত্যাহার করে নেন।
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ন্যাপ ও আওয়ামী লীগ ‘৭৩ এর নির্বাচনের সময়ও আলাদা আলাদা ভাবে শহীদ দিবস পালন করেন। পরে স্থানীয় কিছু সংখ্যা বিত্তশালী লোক ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী লোকজন বালিশিরা পাহাড়ে বালিশিরা ইউএসএফ-এর জমিতে ঢুকে কোটি কোটি টাকার বনাঞ্চল উজাড় করে আনারস, লেবু, তেজপাতা ইত্যাদির বাগান অবৈধভাবে শুরু করেন। এর প্রতিবাদে মোঃ চাঁন মিয়াকে আহ্বায়ক করে মোঃ শাজাহান মিয়া ও রাসেন্দ্র দত্তের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল, মিটিং হয় এবং অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য আহ্বান জানিয়ে বালিশিরা ইউএসএফকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণা দিয়ে কৃষক শ্রমিক মধ্যবিত্ত তথা সকল শ্রেণীর মানুষের দাবি পূরণার্থে শন, বাঁশ, বেত, কাঠ সংগ্রহের জন্য পারমিট প্রথা নিবাহীর চালু করা ও গরিব পাহাড় কামলা দিনমজুরের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায় নিশ্চিতকরণের দাবি জানানো হয়।

বিএনপি’র শাসন তথা রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমানের আমলে গণ মন্ত্রণালয় হতে স্মারক নং-২০/বন/৪৪/৮০ তাং ৩০/৫/৮০ বলে অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদ বালিশিরা ইউএসএফকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণা করে সিলেট জেলা প্রশাসনকে উহা কার্যকরী করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতির সচিবালয় থেকে স্মারক ৮/১৪/৮১ তাং ১৫/৫/৮১ বলে একটি সার্কুলার জারি করে সিলেট জেলা প্রশাসনকে যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিএনপির স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিছু প্রভাবশালী নেতা কর্মী বালিশিরা ইউএসএফের সাথে জড়িয়ে পড়ায় এবং প্রশাসনকে প্রভাবিত রাখায় বহু আন্দোলন, ডেপুটেশন, ঘেরাও, মিছিল, মিটিং, পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপানো সত্বেও ঐ নির্দেশটি সহ রাষ্ট্রপতি সচিবালয়ের নির্দেশ ও এ যাবৎ কার্যকরী হয় নাই।

উল্লেখ্য যে, ১৯৮৭ সালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সরকার মৌলভীবাজারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সম্মুখে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান,পৌর চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়ে যে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় তখন ৩ নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেন্দ্র দত্ত যে তিনটি দাবি রাষ্ট্রপতির সামনে জনস্বার্থে ও এলাকাবাসীর স্বার্থ তোলে ধরেছিলেন তার অন্যতম দাবি ছিল বালিশিরা ইউএসএফ-এর সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণার বনবিভাগ ও রাষ্ট্রপতি সচিবালয়ের নির্দেশকে অবিলম্বে জেলা প্রশাসন কর্তৃক কার্যকরী করানোর ব্যবস্থা করা। ঐ সময় সিলেট রেডিও থেকে চেয়ারম্যান রাসেন্দ্র দত্তের ঐ তিনটি দাবি বারংবার প্রচার করা হয়। কিন্তু এসার সাহেবের দেয়া ওই সমাবেশের আশ্বাসটি আশরাশি রয়ে গেল। তা আর পুরন হলো না।

বালিশিরা আন্দোলনের মুখ্য ভূমিকায় ও নেতৃত্বে যারা ছিলেন তাদের অন্যতম প্রখ্যাত কৃষক নেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া গত ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ দীর্ঘদিন গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগে ভোগে মারা যান। বালিশীরা পাহাড় পুনরুদ্ধার কমিটির সভাপতি মহালদার মোহাম্মদ চাঁন মিয়া বৃদ্ধ বয়সে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে ২০১৫ সালে মারা যান। তার দীর্ঘ আন্দোলনের অভিজ্ঞতার তিক্ত সাক্ষী হয়ে ৮৫ বয়সে নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে এখনো জীবিত আছেন সাংবাদিক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং বালিশিরা পাহাড় পুনরুদ্ধার কমিটির সম্পাদক রাসেন্দ্র দত্ত ও বালিশিরা পাহাড় আন্দোলনের ব্যার্থ কৃষক শ্রমিক ছাত্র-জনতা। আর অপরদিকে বালিশিরা ইউএসএফ এর কোটি কোটি টাকার সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে কিছু সংখ্যক পরস্পর স্বার্থসংশ্লিষ্ট কায়েমী স্বার্থী মহল

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button