যেসব রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা

অনলাইন ডেস্ক: শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দালনকে ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নজিরবিহীন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে নাশকতাকারীরা। এদিন রাজধানীরে রামপুরা-বাড্ডায় প্রায় সারাদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। উত্তরায় ছিলো দিনভর সংঘর্ষ চলে। মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে ব্যাপক সংঘর্ষ। কারফিউ জারি করা হয় সারাদেশে।

গত ১৭ জুলাই রাজধানীর মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হওয়া তাণ্ডব। এরপর একে একে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানী ও মহাখালী টোলপ্লাজা, সেতু ভবন, মেট্রোরেলের স্টেশন, বিটিভি ভবন, মিরপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এবং মহাখালীতে ডেটা সেন্টারে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশ ফাঁড়ি, ট্রাফিক বক্স ও বহু গাড়ি।

এ ছাড়া রাজধানীর বাহিরেও তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দেশের বিভিন্ন পৌরসভা, ইউনিয়ন কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। হামলা করা হয় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসসহ বহু স্থাপনায়। দুর্বৃত্তদের এমন হামলায় তিন পুলিশ ও একজন আনসার নিহত হয়েছে।

ভয়াবহ এমন পরিস্থিতে ১৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয় সরকার। সেনা মোতায়েনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসে। শিথিল করা হয় কারফিউ। বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে খুলে দেওয়া হয় অফিস ও ব্যাংক। রাস্তায় চলাচল করছে গণপরিবহন। ছয়দিন পর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাও চলছে। স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে মানুষের মনে।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বুধবার বলেছেন, দেশের কিছু স্থানে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। মূল সমস্যা ছিল ঢাকায়। অল্প সময়ে আমরা সব নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। বর্তমানে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে বাধ্য হয়েই কারফিউ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসীরা এখানে এসে ঘাঁটি গেড়েছে। পুলিশ সদস্যদের হত্যার জন্য টাকা দিয়ে মানুষ নিয়োগ করা হয়েছে।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরাই এই সহিংসতায় জড়িত। ঢাকায় মোট ৬৯টি স্থাপনায় হামলা হয়েছে। ৫৪টি ট্রাফিক বক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশজুড়ে ভয়াবহ এই সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৫৯টি মামলা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চলাচ্ছে র‍্যাব-ডিবিসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button