মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্থরের মানুষের ঢল নামে মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এ সময় ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে জেলা আওয়ামী লীগের হট্রগোলের ঘটনা ঘটে।
রাত ১২টা বাজার কিছু আগে শহীদ মিনারের কাছে আড়াআড়ি ভাবে অবস্থান নেয় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা, জেলা আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান এর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কয়েকশত নেতা কর্মীকে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠে। এরই জের ধরে পুলিশের সাথে হট্রগোল শুরু হয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের। এসময় পাশেই অবস্থানকারী পুলিশ সুপার মোঃ মানজুর রহমানের কাছে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নেছার আহমদ ব্যারিকেড দেয়ার কারণ জানতে চান এবং ব্যারিকেড তুলে নেয়ার অনুরোধ করেন।
পরে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ব্যারিকেড দেয়া নিয়ে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সকলের শ্রদ্ধা জানানো শেষ হলে তারা শ্রদ্ধা জানাবেন। এসময় দলের নেতা কর্মীদের নিয়ে কিছুটা পিছনে যান। দেখা দেয় উপস্থিত কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা।
হট্রগোলের এক পর্যায়ে নির্ধারিত সময় রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক ড. উমি বিনতে সালাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পুলিশের পক্ষে পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান।
এর পর কিছু সময় শহীদ মিনারে ফুল দেয়া থেমে যায়। পরে শহীদ মিনারের পশ্চিম পাশ থেকে মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসসদ সদস্য মোঃ জিল্লুর রহমানের প্রতিনিধি ফুলের তোরা নিয়ে ও শহীদ মিনারের সম্মুখ থেকে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কয়েকশত নেতা কর্মী শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ফজলুর রহমান, জেলা বিএনপি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ভিডিপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, এলজিইডি, বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড, গণঃপুর্ত বিভাগ, সদর হাসপাতাল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠন শ্রদ্ধা জানায়।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নেছার আহমদ জানান ,যে সব পুলিশ সদস্য ব্যারিকেড দিয়ে আমাদের সামনে হাতে হাত ধরে যারা দাঁড়িয়েছিল তাদের কোন দোষ ছিলনা। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে পলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ভালো জানেন। সুন্দর সুশৃংখল ভাবে সবাই শহীদ মিনারে ফুল দিবেন এ বিষয়ে আমরাও দীর্ঘদিন থেকে সহযোগীতা করে আসছি।
পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ফজলুর রহমান জানান, মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথমবার স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগকে ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পুলিশ। পরে তারা শান্তিপূর্ন ভাবে শ্রদ্ধা জানান শহীদ মিনারে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান জানান, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সকলের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনি দেয়া হয়েছিল। উক্ত নিরাপত্তা বেষ্টনি সব সময় ওইসব অনুষ্ঠানে থাকে। রাত ১২টা বাজার ১ মিনিট আগে ছেড়ে দেয়া হয়। নিরাপত্তার বাহিরে কোন কাজ করেনি পুলিশ। তবে কি কারণে বাঁধার বিষয়টি এসেছে এটি খুঁজে দেখা হবে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।