
জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর: মাদারীপুর সদরে দ্রুতগামী ও বেপরোয়া গতির প্রাইভেটকারের ধাক্কায় সুরাইয়া আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মিম আক্তার (১৪) নামে আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। মর্মান্তিক এই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই রনি কাজী বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে মাদারীপুর সদর উপজেলার হবিগঞ্জ বাজার এলাকার রমজান ভূঁইয়ার বাড়ির সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মামলাটি দায়ের করা হয় পরদিন শনিবার (২৯ নভেম্বর)।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে সুরাইয়া ও তার চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে মিম আক্তার হবিগঞ্জ বাজার থেকে ওষুধ কিনে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। রমজান ভূঁইয়ার বাড়ির সামনে পৌঁছালে পেছন থেকে আসা একটি দ্রুতগামী প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ-৩২-৮১৯৩) তাদের সজোরে ধাক্কা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রাইভেটকারটি রাস্তায় উচ্চগতিতে এপাশ-ওপাশ করে (রেস) চালানো হচ্ছিল। গাড়ির ধাক্কায় সুরাইয়া রাস্তার পাশের একটি রেইনট্রি গাছের ওপর ছিটকে পড়েন এবং মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। অন্যদিকে মিম আক্তার রাস্তার পাশে পড়ে গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষের পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আগুন ধরে যায়।
নিহত সুরাইয়া আক্তার স্থানীয় বাবুল মুফতির ভাড়াটিয়া বাড়ির বাসিন্দা। আহত মিম আক্তারকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় জনতা ধাওয়া করে তাহমিদ ইসলাম সামি (১৬) নামে এক কিশোরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। তবে গাড়িতে থাকা সাদমান চৌধুরী, সাইমুল, আবির হাওলাদার ও লিয়াম নামে বাকি চার অভিযুক্ত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
মামলার বাদী ও নিহতের বড় ভাই রনি কাজী বলেন, “ওরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে আমার বোনকে হত্যা করেছে। আমি আমার বোনের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
মাদারীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং পলাতক বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।




