বৈদ্যুতিক আকাশযাত্রার পথিকৃৎ: HY4 প্রকল্পে বাংলাদেশের দেবযানী ঘোষের অবদান

সংগ্রাম দত্ত:বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও পরিবেশ দূষণ রোধে পরিবহন খাতে টেকসই প্রযুক্তির প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড বিমান প্রযুক্তি ভবিষ্যতের পরিবহন ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মেয়ে দেবযানী ঘোষের অবদান উল্লেখযোগ্য। তিনি জার্মানির উলম বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষক হিসেবে এইচওয়াই ফোর( HY4 ) প্রকল্পে কাজ করেছেন । যা’ বিশ্বের প্রথম কার্বন নিঃসরণমুক্ত যাত্রীবাহী বিমান তৈরির উদ্যোগ।

HY4 একটি চার আসনের যাত্রীবাহী বিমান, যা হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ও লিথিয়াম ব্যাটারির সমন্বয়ে চালিত। এই বিমানটি ২০১৬ সালে জার্মানির স্টুটগার্ট বিমানবন্দরে সফলভাবে উড্ডয়ন করে, যা পরিবেশবান্ধব বিমান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। HY4 প্রকল্পের নেতৃত্বে রয়েছে জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টার (DLR) এবং উলম বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রকল্পের প্রধান গবেষণা অংশীদার।

দেবযানী ঘোষ HY4 বিমানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ও পাওয়ার ইলেকট্রনিক্স ডিজাইনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সিলিকন কার্বাইড ভিত্তিক পাওয়ার ইলেকট্রনিক্স আর্কিটেকচার তৈরি করেছেন। যা ফুয়েল সেল ও ব্যাটারির ডিসি বিদ্যুৎকে এসিতে রূপান্তর করে বিমানের মোটরে সরবরাহ করে। এছাড়া, তিনি বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কৌশল ও ব্যাটারির চার্জিং-ডিসচার্জিং অনুযায়ী শক্তির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য ইন্টারফেস ডিজাইন করেছেন।

বিমান পরিবহন খাতে কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। HY4 প্রকল্পের মতো উদ্যোগগুলি এই নিঃসরণ কমাতে সহায়ক হতে পারে। দেবযানী ঘোষের মতো গবেষকদের অবদান এই প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

দেবযানী ঘোষের HY4 প্রকল্পে অবদান বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়। তিনি প্রমাণ করেছেন যে, সঠিক সুযোগ ও পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণরা বৈশ্বিক প্রযুক্তি উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। তার এই সাফল্য ভবিষ্যতে আরও অনেককে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি গবেষণায় অনুপ্রাণিত করবে।

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button