বাবার মৃত্যুর শোকেও অদম্য মারিয়া : ফলাফলে কেন তবে বিষাদের ছায়া

পটুয়াখালী প্রতিনিধি,  এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে যখন আনন্দ আর উচ্ছ্বাস, তখন পটুয়াখালীর মারিয়া আক্তারের চোখে জল। বাবার লাশ বাড়িতে রেখে যে মেয়ে পরীক্ষা দিয়েছিল, সেই অদম্য মারিয়া জিপিএ-৩.৮৩ পেয়েও হাসতে পারছে না। আশানুরূপ ফল না হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছে সে।

গত ১০ এপ্রিল, যেদিন সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়, সেদিন ভোরেই মারিয়ার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎই মারা যান তার বাবা মামুন হাওলাদার। একদিকে বাবার নিথর দেহ, অন্যদিকে ভবিষ্যতের প্রথম বড় পরীক্ষা। এমন হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিতেও বাবার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে মারিয়া ছুটে গিয়েছিল পরীক্ষাকেন্দ্রে। শোক বুকে চেপেই অংশ নিয়েছিল বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায়।

মারিয়া পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামের শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, সে জিপিএ-৩.৮৩ পেয়েছে। কিন্তু এই ফল তার মন ভরাতে পারেনি।
অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মারিয়া জানায়, “বাবা সবসময় চাইতেন আমি মানুষের মতো মানুষ হই। আমাকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। বাবার সেই স্বপ্ন পূরণের জন্যই তার লাশ রেখে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার প্রস্তুতি অনুযায়ী ফল আসেনি, তাই খুব কষ্ট হচ্ছে।”

বাবার স্বপ্ন পূরণের পথে এই ফল হয়তো মারিয়ার জন্য একটি ধাক্কা। তবে যে মেয়ে জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তেও ভেঙে পড়েনি, তার এই কান্না হয়তো সাময়িক। শোককে শক্তিতে পরিণত করা এই সাহসী কন্যার লড়াই নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button