বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই: অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

টিআই তারেক : জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতা-সৈনিকের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে জগদ্দাল পাথরের মত চেপে বসা ১৫ বছরের স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার পরাজয় হয়েছে এবং বাংলাদেশের বিজয় সূচিত হয়েছে। অর্জিত বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতার সুবাতাস অনুভব করছি। দেশের মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। বিজয়ের পরে দেশের ভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের বাড়ি ঘরে, উপাসনালয়ে হামলার নাটক সৃষ্টি করে প্রতি বিপ্লব ঘটানোর পায়তারা করেছিল পরাজিত শক্তি। জামায়াত দেশের ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা রাত জেগে মন্দির পাহারা দিয়েছে। বিষয়টি বিশ^ মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
রবিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে (বিডি হল) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও যশোর শহর সাংগঠনিক জেলা শাখার আমীর অধ্যাপক গোলাম রসূলের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা মোবারক হুসাইন ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, যশোর সাংগঠনিক জেলা পূর্ব আমীর মাওলানা আব্দুল আজীজ, যশোর সাংগঠনিক জেলা পশ্চিম আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, শহর সাংগঠনিক জেলা নায়েবে আমীর বেলাল হুসাইন প্রমুখ।
শহীদ পরিবারের পক্ষে অনুভূতি ব্যক্ত করেন শহীদ ইমতিয়াজ হোসেন রাজিবের পিতা নওশের আলী ও শহীদ তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী নাসরিন সুলতানা। এসময় অন্যান্য শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মোবারক হুসাইন বলেন, আমি পাঁচটি বছর ধরে এই যশোরে সাংগঠনিক সফরে যাতায়াত করছি। কিন্তু ঐতিহাসিক এই বিডি হলের মত খোলা জায়গায় আমাদের কথা বলার পরিবেশ ছিল না। আজ আমি এখানে কথা বলতে পেরে আবেগ আপ্লুত। তিনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৫টি বছর ঘরে ঘুমাতে পারি নাই। আমাদের নেতা-কর্মীরা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আজকে স্বাধীনভাবে কথা বলার এই কৃতিত্ব দেশের সাহসী ছাত্র সমাজের। তারা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আমরা তাদের কাছে ঋনী। এখন আমাদের দায়িত্ব একটি দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মান করার। জামায়াত ইসলামী সেই কাজটি করে যাচ্ছে।
সমাবেশ পরিচালনা করেন যশোর সাংগঠনিক জেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস ।
বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের মাত্র এক মাসের আন্দোলনে দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। এ আন্দোলনে এক হাজারের বেশি শহীদ হয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শহীদ পরিবারের পাশে রয়েছে। সারাজীবন তাদের পাশে থাকবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কার করতে যে সময় লাগবে। আমরা সেই সময় অন্তবর্তিকালীন সরকারকে দিতে রাজি আছি। সংস্কারের পরেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। যে নির্বাচনে কেউ বলবে না, যে আপনাদের ভোট হয়ে গেছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাধারণ মানুষের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে। সকলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় যশোরের বিভিন্ন স্তরের হাজারো জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button