জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোই এখন আমাদের প্রধান কাজ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আমরা তাদের দুঃখ ভাগাভাগি করতে এসেছি। এখন থেকে আগামী এক সপ্তাহ আমাদের স্বাভাবিক সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কাছে ছুটে যাওয়াই এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান কাজ।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের শেখের কেল্লা এলাকায় পানিবন্দি দুর্গত বাসিন্দাদের ত্রাণ দেওয়ার সময় তিনি এইসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, আমরা শুনে আসছি, প্রতিবেশী ওই দেশ আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু। কিন্তু
গ্রীষ্মে যখন আমাদের পানির প্রয়োজন হয়, তখন আমাদেরকে পানি না দিয়ে পিপাসাক্ত করে দেয়। গ্রীষ্মে বানায় মরুভূমি, আর বর্ষার সময় পানি ছেড়ে দেয়।
তিনি বলেন, আমাদের একটা সরকার ছিল, সাড়ে ১৫ বছর। তারা বলতো আমাদের দেশকে সিঙ্গাপুর বানায় ছাড়ছে। এ হলো সিঙ্গাপুরের দৃশ্য! তারা বলতো এটা কানাডা, এ হলো কানাডার দৃশ্য! এগুলো সব ছিল মিথ্যা ও বোগাস। তারা জনগণের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। মানুষ তার নিজের বাসায় একটা পর্দা টানালে বলতো- এ ঘরে জঙ্গি আছে। ওদের মাথায়, ওদের মগজে সব সময় জঙ্গি জঙ্গি ভাব ছিল। আসল জঙ্গি তারা। তারা মাথায় হেলমেট দিয়ে হাতে বন্দুক নিয়ে মানুষের ওপর আক্রমণ চালাতো। তারাই হল আসল জঙ্গি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের ছাত্র, তরুণ, যুব সমাজ তাদের সামনে বুক পেতে দিয়ে, বুকের মধ্যে গুলি নিয়ে তাদেরকে তাড়িয়েছে বাংলার বুক থেকে। একটা শাসক সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করলো, তাকে পালাতে হবে কেন? তারা বলতো- আমাদেরকে নাকি উন্নয়নের মহাসড়কে উঠিয়েছে। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি আমাদের থেকে জালিম বিদায় করেছেন। চিরতরে যেন এ জালিমের বিদায় হয়। আর কোনো জালিমের আগমন না ঘটে। দেশ যেন সুবিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকটা মা-বোন, ভাইয়েরা যাতে সম্মানের সাথে বসবাস করতে পারে। ইজ্জত, দ্বীন, ইমান, ধর্ম নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করবে। কেউ কাউকে বাঁধা দেবে না। আফসোস, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান, তার জন্য একমাত্র সংখ্যালঘু মুসলমান হচ্ছে বাংলাদেশে। সকল ধর্মের মানুষ তার ধর্মীয় অনুশাসন পালন করে, তাতে বাঁধা নেই। কিন্তু একজন খতিবকে মিম্বরে দাঁড়িয়ে তার ইচ্ছে মতো বক্তব্য দিতে দেবে না। ওয়াজ মাহফিলের মাইক কেড়ে নেবে। তফসির মাহফিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। ১৪৪ ধারা জারি করবে। পুলিশ পাঠিয়ে দেবে, ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ করবে। বাংলার মানুষ আর ভবিষ্যতে তা হতে দেবে না। ১৮ কোটি মানুষ ৩৬ কোটি হাত হাতে হাত রেখে বাংলাদেশকে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নেব। এ জন্য আপনাদের, দোয়া, সাহায্য এবং ভালোবাসা চাই।
বক্তব্য শেষে দুর্যোগের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে দোয়া করেন জামায়াতের এ নেতা।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নেতা দ্বীন মোহাম্মদ, সহ সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মাছুম, জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমিন ভূঁইয়া, নায়েবে আমির এআর হাফিজ উল্যা, সেক্রেটারি ফারুক হোসেইন নুরনবী, সহ সেক্রেটারি নাছির উদ্দিন মাহমুদ, এডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, জেলা প্রচার সম্পাদক সরদার সৈয়দ আহমদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আবদুর রহমান, শহর আমির এডভোকেট আবু ফারাহ নিশান, শিবিরের জেলা সভাপতি আরমান হোসেন পাটওয়ারী, সেক্রেটারি ফরিদ উদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।