কাজী নূরনবী নাইস, নওগাঁ: নওগাঁর পত্নীতলায় আম বাগান দখল করে ৮ শতাধিক গাছ কেটে ফেলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মো. আবুল হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী ফল ব্যবসায়ী। শুক্রবার দুপুরে নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী প্যারিমোহন গ্রন্থাগারে লিখিত বক্তব্যে তিনি বাগান দখল ও গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ করেন।
মো. আবুল হোসেন (৫০) ঢাকার সাভার জালেম্বর মহল্লার নিরাজ উদ্দীন দেওয়ানের ছেলে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়ান এন্টারপ্রাইজ।
লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, ‘নওগাঁর পত্নীতলার ব্যবসায়ী আনিছুর মোল্লা আমার বন্ধু। তার মাধ্যমে গত প্রায় ১২ বছর আগে পত্নীতলার ঘোষপাড়া গ্রামের মৃত গোপেন্দ্রনাথ ঘোষের ছেলে গৌতম ঘোষ ও মেয়ে মিতালী রাণী ঘোষের কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকায় পাটিচোরা ইউনিয়নের ছালিগ্রাম মৌজায় ৪ দশমিক ৩২ একর জমি কিনি। যার হাল দাগ নং-১০১৮, সাবেক দাগ-৫৩ এবং জেএল নং-২২৬। এরপরওই বছরই ওই জমিতে ১২শোটি বারি-৪ জাতের আম গাছের চারা রোপণ করে ভোগ দখল করে আসছি। আম গাছগুলো বড় হয়ে কয়েক বছর ধরে ফল দেওয়া শুরু করেছে। প্রতি বছর ওই জমি থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার আম বিক্রি করে সাংসারিক খরচ বহনের পাশাপাশি সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করছিলাম।’
মো. আবুল হোসেন আরও বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর আকস্মিকভাবে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব পাটিচোরা গ্রামের নাইম হোসেন এবং তার দুই ভাই লেমন হোসেন ও ছেলিম হোসেনসহ আরও ২০/২৫জন হাসুয়া, দা, কুড়াল, লাঠি-সোঠা নিয়ে বাগানে ঢুকে পড়ে। তারা ৮শোটির বেশি আম গাছ কেটে ফেলে। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এসময় বর্গাদার আব্দুস সামাদ তাদের বাঁধা দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। গাছ কতর্নকারীরা বিএনপির রাজনিতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।’
‘আমি ঢাকার সাভারে বসবাস করায় এবং ব্যবসায়ীক কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা আমার কাছ থেকে অনৈতিকভাবে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছে। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পত্নীতলা থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে।’ যোগ করেন ভুক্তভোগী।
দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগী এই ব্যবসায়ী। এসময় ব্যবসায়ীর ছেলে শফিউল্লাহ দেওয়ান ও ভাতিজা শোভন শাহারিয়ার উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্ত নাঈম হোসেন হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘জমিটি ১৯৯১ সালে আমাদের নামে খারিজ ও পত্তন মূলে হোল্ডিং আছে। আমরাই ওই জমির মালিক। ওনাদের জমিরও দাগও আলাদা। বিষয়টি নিয়ে যেহেতু বিবাদ চলছে আমরাও থানায় বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওনি না বসে টালবাহানা করে। আমরা জমির মালিক। তাই আমরা দখল নেব এটাই স্বাভাবিক।’
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. এনায়েতুর রহমান বলেন, ‘অনেক দিন আগে আবুল হোসেন নামের একজন ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ করেছিলেন আম বাগান মালিকানা সমস্যা নিয়ে। তবে কয়েক দিন থানায় এসে তিনি জানান তার বাগানের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। পুলিশ পাঠিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তীতে যতটুকু জেনেছি তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। এখন আদালত থেকে যে নিদের্শনা আসবে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।