নওগাঁ সংবাদদাতা: নওগাঁর মহাদেবপুরে শয়নঘরের ভেতর থেকে রিনা পারভীন (৪৩) নামে এক নারীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
২৫ জানুয়ারি,বৃহস্পতিবার রাতে মহাদেবপুর উপজেলার কুঞ্জবন মাস্টারপাড়া এলাকা থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার ঘরের আলমারির তালা ভাঙা ও জিনিসপত্র এলোমেলো ছিল।ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার দিনের কোনো একসময় দুষ্কৃতকারীরা তার মুখ ও হাত-পা বেঁধে হত্যার পর আলমারি ভেঙে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
নিহত রিনা পারভীন মহাদেবপুর উপজেলার কুঞ্জবন মাস্টারপাড়া এলাকার ফেরদৌস আলমের স্ত্রী ও মৃত ইয়াদ আলীর মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, ভালোবেসে প্রায় ২৫ বছর আগে উপজেলা সদরের দশকলোনিপাড়ার মৃত লোকমান হোসেনের ছেলে ফেরদৌস আলমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। প্রায় ১৬ বছরের সংসার জীবনে তাদের কোনো সন্তান না হওয়ায় তাকে রেখেই তার স্বামী ফেরদৌস গোপনে অন্যত্র আবার দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় এবং ২০১৬ সালে তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।
এর পর থেকে ছোটভাই একরামুল হোসেন ও ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে মধ্যবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। কয়েক বছর আগে কুঞ্জবন মাস্টারপাড়ায় তার নিজস্ব জমিতে দুই ইউনিটের একটি বাসা তৈরি করে একটি ইউনিটে তিনি ও অপর ইউনিটে তার ছোট ভাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার সকালে একরামুল হোসেন ও তার স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হয়ে যান।
এর পর বাসায় ফিরে রাত ৮টার দিকে একরামুলের স্ত্রী ঘরের দরজা খুলে ঘরের মেঝেতে তার ননদ রিনা পারভীনের হাত-পা বাঁধা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চেঁচামেচি শুরু করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নিহতের ভাই একরামুল হোসেন বলেন, রাত ৮টার দিকে খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে ছুটে আসেন। তার বোনের শ্বাসকষ্টের রোগ ছিল। প্রচণ্ড শীতে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এ জন্য সকালবেলা তাকে না ডেকেই প্রতিদিনের মতো তারা স্বামী স্ত্রী সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। বিকালে তার স্ত্রী বাসায় ফিরে আসেন। কিন্তু তার বোনের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে রাত ৮টার দিকে ঘরের দরজা খুলে মুখ ও হাত-পা বাঁধা মরদেহ দেখতে পান।
এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করেতেই পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।