দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুর সদর উপজেলার ২ ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে পীরবক্স ওয়াকফ এস্টেট। যার ইসি নং ১০০৯৮, জমির পরিমাণ ১০৯ বিঘা ১৯ কাঠা। এস্টেটের ভিতরে রয়েছে আবাদি জমি, বাঁশঝাড়, পুকুর ও মসজিদ। পীরবক্স কবিরাজ ১ ছেলে তফির উদ্দিন ও ১ মেয়ে তছিমনকে রেখে মৃত্যুবরণ করেন। পীরবক্স কবিরাজ মারা যাওয়ার পর তার পুত্র তফির উদ্দিন সুটিমনকে বিয়ে করে সংসার করা কালীন মারা যায়। তার কিছুদিন পর সুটিমন মারা যায়। তাদের কোন সন্তান নেই। পীরবক্স কবিরাজের কন্যা তছিমনের বিয়ে হয় খয়েরতুল্যা মোল্লার সাথে। শরিয়তুল্লাহ, ওসমান গণি, উজির এবং ২ মেয়ে রেখে তছিমন ও তার স্বামী মারা যায়। জামাল উদ্দিন সহ ৩ কন্যাকে রেখে শরিয়তুল্লাহ মারা যায়। নছির, লতিফ, খতিব, রেজাউলসহ ২ কন্যাকে রেখে ওসমান গণি মারা যায়। নজরুল, আবু, জিয়াউর সহ ৪ কন্যাকে রেখে উজির মারা যায়। পীরবক্স কবিরাজের বংশধর নাতি মোতয়াল্লী হিসেবে ওসমান গণি দায়িত্ব পালনকালে খাজনা পরিশোধ করা থেকে বিরত থাকায় ভূমি অফিসে ২৭ টি মামলার উদ্ভব হয়েছিল। যার ফলে মোতয়াল্লীর পদ থেকে ওসমান গনিকে অপসারণ করে তদস্থলে জেলা ওয়াকফ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান অফিসিয়াল মোতয়াল্লী হিসেবে এস্টেট পরিচালনা করতে থাকেন। এলাকাবাসীরা জানান এস্টেটের মোতয়াল্লী হিসেবে ওসমান গনির পুত্র আব্দুল লতিফ দায়িত্ব নেওয়ার পর ওয়াকফ দলিলের শর্ত ভঙ্গ করে আবাদি জমিতে বিভিন্ন লোকজনদের নিকট থেকে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি দলিল ছাড়াই পজিশন হস্তান্তর করেছে বলে ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। এরকম প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক কার্যালয় হতে গত ৫ মে ২০১৬ তারিখে ওঃ প্রোঃ দিঃ/৫৯ নং স্মারকে পীরবক্স কবিরাজ ওয়াকফ এস্টেটের আব্দুল লতিফকে মোতয়াল্লীর পদ থেকে অপসারণ করে তদস্থলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিনাজপুর সদরকে অফিসিয়াল মোতয়াল্লী নিয়োগ করা হয়। এই খবর পেয়ে ভুমিদস্যু আব্দুল লতিফ নিজের আয়ত্বে এস্টেটটি রাখার জন্য সুকৌশলে সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশ হাইকোর্ট ডিভিশনে ৮২৭০ / ২০১৬ নং রিট পিটিশন করে। এই রিট পিটিশনের ধার্য্য তারিখে প্রতিপক্ষ অনুপস্থিত থাকায় সু-কৌশলে আব্দুর লতিফ স্থগিতাদেশ করে নেয়। পীরবক্সের বংশধররাসহ এলাকার লোকজনরা জানায়, আব্দুল লতিফ হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সে দিনকে রাত, আর রাতকে দিন বানিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আবাদি জমির উপরে বিভিন্ন জনের নিকট বসতবাড়ির পজিশন হস্তান্তর করে চলেছে। ফলে পীরবক্স ওয়াকফ এস্টেটের ফসলী জমি কমতে কমতে এখন শূন্যের কোঠায় । আমাদের প্রতিনিধি ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সরজমিনে ওয়াকফ এস্টেট পরিদর্শনকালে পীরবক্স কবিরাজ ওয়াকফ এস্টেটের ভিতরে শতাধিক বাড়ির দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ে। বর্তমানে এস্টেটের ভিতরে মসজিদসহ পীরবক্স কবিরাজের কবরস্থানটির বেহাল দশা। ইতিপূর্বে একটি মক্তব ছিল সেটিও এখন নেই। আব্দুল লতিফ একক আধিপত্য বিস্তার করায় পীরবক্স এর বংশধরেরা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। পীরবক্স কবিরাজ ওয়াকফ এস্টেটটি রক্ষার স্বার্থে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক সহ উদ্ধতন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
1