জলদস্যুদের কবলে থাকা ছেলে সাঈদের চিন্তায় নির্ঘুম রাত বাবা-মায়ের

মো: ওমর ফারুক ,সদর  (নওগাঁ) প্রতিনিধি : ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশের এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটিতে থাকা ২৩ নাবিকের মধ্যে রয়েছেন নওগাঁর এ,এস,এম সাইদুজ্জামান সাঈদ। তিনি নওগাঁ শহরের আরজী নওগাঁ- শাহী মসজিদ ফিসারি গেট এলাকার আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে সাইদুজ্জামান সাঈদের পরিবার জানতে পারেন ছেলে যে জাহাজে রয়েছে সেই জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। পরে জাহাজটি জলদস্যুরা আটক করে সোমালিয়ায় তাদের সুবিধামতো জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। এমন খবর শোনার পর থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সাঈদের বাবা-মা। ছেলেকে ফেরত পেতে সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেলে শহরের বাড়িতে গিয়ে সাইদুজ্জামান সাঈদের বাবা-মাকে ছেলের জন্য আর্তনাদ করতে দেখা যায়। এসময় বাবা আব্দুল কাইয়ুমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন- গতকাল বিকেল ৩টার সময় জানতে পারি ছেলে যে জাহাজে রয়েছে সেই জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। তবে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা তারা দিচ্ছে। এরপর রাত ১০টায় আমার ছেলের বউয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয় ছেলের। তখন ঘরে বন্দি করে রাখার কথা জানান। জাহাজটি তাদের জিম্মায় নিয়েছে। তাদেরকে কিছু করতে দিচ্ছে না বলে জানান। এ খবর পাওয়ার পর থেকে সারা রাত পরিবারের কেউ ঘুমাতে পারেনি। সারারাত আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছি ছেলের জন্য। ঘুমবিহীন রজনী কাটিয়েছি।
মা কোহিনুর বেগম বলেন, এখন আল্লাহর ওপর ভরসা রাখছি আমরা। আল্লাহ যেন সুস্থভাবে আমার ছেলেসহ জাহাজের সবাইকে সবার মায়ের বুকে ভালোভাবে ফিরিয়ে দেয়। এছাড়াও আমরা প্রধানমন্ত্রী ও কোম্পানির কাছে অনুরোধ জানাবো তারা যেন খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেয়। মা হিসেবে এটাই আশা। এসময় দেশবাসীসহ সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান তিনি।
জাহাজটিতে আটক সাইদুজ্জামান সাঈদের স্ত্রী মান্না তাহরিন বলেন- সর্বশেষ গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার স্বামীর সঙ্গে কথা হয়। তখন তিনি তাকে জানান তারা সবাই ভালো আছেন। ইফতার করছেন এবং সবাইকে এক রুমে রাখা হয়েছে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় দিকে জাহাজের আরেকজন আমাকে ভয়েস মেসেজ দিয়ে রেখে দেন সবাই ভালো আছেন। সেহরি খেয়ে সবাই এক রুমেই ঘুমাচ্ছেন। তবে মুক্তিপণ যত তাড়াতাড়ি দেওয়া দিয়ে দেয়া হবে ততো তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মুক্তিপণ দেওয়া না হলে একে একে মেরে ফেলা হবে। এটা শোনার পর আরও বেশি আমরা চিন্তায় আছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এক বছর বয়সী এক মেয়ে আছে। বাচ্চাটা অনেক ছোট এখনো বুঝতে শিখেনি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কাছে একটাই আবেদন আমার স্বামীসহ জাহাজের সবাইকে সুস্থভাবে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button