সংগ্রাম দত্ত: বিগত ৫ জুন ২০২৪ সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চা শ্রমিক সন্তান খাইরুন আক্তার জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে ৭৬ হাজার ২৮১ ভোট পেয়ে ভাইস নির্বাচিত হয়েছেন।
জানা গেছে, খায়রুন ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য চার প্রার্থী জামানত হারাতে চলেছেন।
জানা যায়, চা বাগানের শ্রমিকরা সভা ডেকে তাকে প্রার্থী করেছেন। মনোনয়ন ফরম কেনা, প্রচারণার কাজসহ সব ব্যয় মিটিয়েছেন তারা। ১০ টাকা করে গণচাঁদা তুলে, নানাজনের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে সেই খরচের ধাক্কা সামলানো হয়েছে। খায়রুনের বিজয়ে চা বাগানগুলোতে রীতিমতো উৎসব বিরাজ করছে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার নেট দুনিয়ায় তাঁর বক্তব্য ভাইরাল হয় নেটিজেনদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
উল্লেখ্য যে, পাকিস্তান আমলে তৎকালীন মুসলিম লীগের সমর্থনপুষ্ট চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা এম সুলেমান এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফুলছড়া চা বাগানের রাজেন্দ্র প্রসাদ ব্যানার্জি বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে আসেন। তিনি পাক আমলের চা শ্রমিকদের মাঝে প্রথম ব্যাচেলার ডিগ্রি ও এল এল বি ডিগ্রীধারী ছিলেন। তাঁর অগ্রজ সুরেন্দ্র প্রসাদ ব্যানার্জি ও আন্দোলন সংগ্রাম করে চা শ্রমিক নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন এবং ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে কালীঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে বারংবার নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিশিষ্ট চা শ্রমিক নেতা রাজেন্দ্র প্রসাদ ব্যানার্জির কন্যা ফাল্গুনী ব্যানার্জি রিতাও বাংলাদেশের চা শ্রমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রথম নারী এলএলবি ডিগ্রিধারী ও আইনজীবী হিসেবে সমাজে পরিচিতি লাভ করেন।
২০১৪ সালে ও ২০১৯ পরপর দুবার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগানের চা শ্রমিক সন্তান ও স্নাতক ডিগ্রিধারী সাগর হাজরা পরপর দু’বার শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।