একাধিক ত্রুটিতে আটকে গেল এনসিপির নিবন্ধন, যাচাইয়েই বাদ দিলো ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য করা আবেদন প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়েই হোঁচট খেয়েছে নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দেশের ২৫টি উপজেলা বা থানায় ন্যূনতম ২০০ জন করে সদস্যের তালিকা প্রদানে ব্যর্থতা এবং দাখিল করা দলিলে একাধিক গুরুতর ত্রুটি থাকায় দলটির আবেদন অযোগ্য ঘোষণা করেছে ইসি।

শনিবার (১৯ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসব অসঙ্গতির কথা জানানো হয়।

ইসি জানায়, দলীয় নিবন্ধনের জন্য এনসিপির জমা দেওয়া কাগজপত্রে সাংগঠনিক কাঠামো, সদস্য তালিকা, আর্থিক স্বচ্ছতা ও দলীয় গঠনতন্ত্রে একাধিক ঘাটতি রয়েছে।

যেসব প্রধান ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে ইসি:
অসম্পূর্ণ সাংগঠনিক কাঠামো: চিঠিতে বলা হয়েছে, দলের সব কার্যকর জেলা কার্যালয়ের ঠিকানা জমা দেওয়া হয়নি। ঢাকা ও সিলেট জেলা কার্যালয়ের ভাড়ার চুক্তিপত্রে দলের নাম উল্লেখ নেই। একইভাবে, কিশোরগঞ্জের ইটনা ও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা কার্যালয়ের দলিলেও দলের নাম বা ঠিকানার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
আর্থিক অস্বচ্ছতা: দলটির তহবিলের উৎসের বিবরণ থাকলেও মোট তহবিলের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। এটি আর্থিক স্বচ্ছতার পরিপন্থী।

গুরুত্বপূর্ণ দলিলে স্বাক্ষর অনুপস্থিত: নিবন্ধন আবেদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আয়োজিত দলীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণীর শেষ পাতায় কোনো স্বাক্ষর ছিল না, যা এর বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
গঠনতন্ত্রে অস্পষ্টতা: দলের গঠনতন্ত্রে সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন বা জেলা কমিটি থেকে কীভাবে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে, সে বিষয়ে কোনো বিধান রাখা হয়নি।
বাধ্যতামূলক প্রত্যয়নপত্র না দেওয়া: সবচেয়ে গুরুতর ত্রুটি হিসেবে ইসি উল্লেখ করেছে যে, দলটি এমন কোনো প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেনি যেখানে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে— তাদের কার্যক্রম সংবিধানবিরোধী নয় এবং কুখ্যাত ‘কোলাবোরেটর (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার ১৯৭২’ ও ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) অ্যাক্ট ১৯৭২’-এর অধীনে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি দলটির সদস্য নন।

সব মিলিয়ে, এসব ঘাটতির কারণে নির্বাচন কমিশন এনসিপির নিবন্ধন আবেদনটি প্রাথমিকভাবে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। তবে দলটিকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে সব ত্রুটি সংশোধন করে প্রয়োজনীয় দলিলাদিসহ পূর্ণাঙ্গ আবেদন পুনরায় দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button