ইন্টারনেটের জুয়া খেলার টাকা না পেয়ে খুন করেন ৭০ বছরের বৃদ্ধাকে

আরিফুর রহমান, মাদারীপুর : ইন্টারনেটে জুয়া খেলার টাকা জোগার করতে বৃদ্ধার স্বর্ণালংকার ছিনতাই করতে গিয়ে খুন হয় এমনটাই স্বীকারোক্তি দিয়েছে খুনি যুবক। মাদারীপুরে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় বৃদ্ধার খুনের রহস্য উদঘাটন করে আসামীকে গ্রেফতার করেছে শিবচর থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পরে পুলিশের কাছে ও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে যুবক।
শুক্রবার রাতে জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ১২ জানুয়ারি দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে ছেলেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য পাশের ছোট কুতুবপুর বাজারে যায় ৭০ বছর বয়সী ফজিলাতুন্নেছা। এরপর তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে স্বজনরা। নিখোঁজের ১০দিন পর ২২ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে স্থানীয়রা বাড়ির পাশের হোগলার মাঠে পাতা আনতে গেলে একটি বস্তার মুখ রশি বাঁধা অবস্থায় দেখলে সন্দেহ হয়। পরে থানা পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এই ঘটনায় নিহতের নিহতের মেয়ে রেখা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বৃদ্ধার খুনের ঘটনাটি ছিল ক্লুলেস একটি ঘটনা। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার রাতে নিজবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা সোহাগ হাওলাদারকে। উদ্ধার করা হয় নিহতের সাথে থাকা মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল। পরে সোহাগকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম আরো জানান, ইন্টারনেটে জুয়ায় আসক্ত ছিল সোহাগ। জুয়ার টাকার প্রয়োজন হলে বৃদ্ধা ফজিলাতুন্নেছাকে সহজ টার্গেট বানায়। আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকে সোহাগ। বৃদ্ধা আসলে পিছন থেকে তাকে অজ্ঞান করার জন্য গলায় রশি পেচিয়ে চাপ দিয়ে ধরে। এতে শ^াসরোধ হয়ে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। সে মূহুর্তে বৃদ্ধার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ও হাতের বাটন মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন আবার এসে বৃদ্ধার লাশটি বস্তাবন্দি করে পাশের একটি জঙ্গলে ফেলে দেয়। পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তির পর ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। মামলার পরবর্তী কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

সম্পৃক্ত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button